অনলাইন ডেস্ক : ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে পরিবহনের সংখ্যা বাড়ছে। আজ শুক্রবার (৮ জুলাই) ভোর রাত থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত সেতুর ওপর গাড়ী বিকল ও অতিরিক্ত যানের চাপে ২০ কিলোমিটার সড়কে যানজট ও ধীরগতিতে চলছে। অবশ্য বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়ক স্বাভাবিক হতে থাকে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাড় থেকে রাবনা বাইপাস পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কে এই যানজটের ফলে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।
সরেজমিনে মহাসড়কের উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সকালে গিয়ে দেখা যায় গাড়ীর অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। মাঝে মধ্যে যানজট ধীরগতিতে চলছে। বেলা ১১ টার পর থেকে মহাসড়ক একেবারে স্বাভাবিক হতে থাকে। অনেকে পিকআপ ভ্যান এবং ট্রাকের ছাদে করে রোদে পুড়ে বাড়ি ফিরছেন। বাসস্ট্যান্ডে অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। এদিকে ঘরমুখো মানুষ অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা আসা বিনিময় গাড়ীর সুপারভাইজার রশিদ মিয়া বলেন, রাবনা বাইপাস থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট। অনেক সময় ধরে বসে আছি। কখন যে গাড়ি চলবে বুঝতে পারছি না। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মানুষ।
মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করে কাজ করছেন ট্রাফিক পুলিশ।
যানজট নিরসনে পুলিশ এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ক একমুখী করেছে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন এলেঙ্গা থেকে সেতুর দিকে যাচ্ছে। অপরদিকে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী যানবাহন সেতু পার হয়ে ভূঞাপুর সড়ক হয়ে এলেঙ্গা হয়ে ঢাকায় যাচ্ছে। তবে উত্তরবঙ্গ থেকে গরুবাহী ট্রাক একমুখী সড়কের আওতার বাইরে রয়েছে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউর রহমান বলেন, সিরাজগঞ্জ প্রান্তে গাড়ী টানতে না পারায় মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব পাড় থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত বাম্পার টু বাম্পার গাড়ি যাচ্ছে।
এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর এশরাজুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার অফিস ও গার্মেন্টস ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে অত্যাধিক গাড়ীর চাপ। ফলে শুক্রবার ধীরগতি আছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আমরা কাজ করছি।
বঙ্গবন্ধু সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী বলেন, সেতুর ওপর কয়েকটি যান বিকল হয়ে যায়। পরে সেগুলো রেকার দিয়ে সরানো হয়। এর ফলে কিছু সময় যানজট লাগে।
তিনি আরো বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সেতু দিয়ে ৪৩ হাজার ৫৯৫টি ছোট বড় যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৭০০ টাকা। যা সর্বোচ্চ টোল আদায়।
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথে ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০-২১ হাজার গাড়ি পারাপার হয়। কিন্তু ঈদে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫-৩৬ হাজারে। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটারে দুই লেনের সড়ক থাকায় প্রায় যানজটের সৃষ্টি হয়। কিন্তু গত ঈদুল ফিতরে পুলিশের বিশেষ কয়েকটি সিদ্ধান্ত এবং প্রচেষ্টার ফলে মহাসড়ক যানজটমুক্ত থাকে। ফলে ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতে বাড়ি ফেরেন মানুষ।
মতিহার বার্তা/এমআরটি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.